রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই তথ্য জানান।

ফেসবুক পোস্টে ড. আসিফ নজরুল লিখেন, "মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।"

তিনি আরও বলেন, "এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২-এর ধারা ১০ এর অধীনে দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিত করা হবে।"

ঘটনার পটভূমি

গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তায় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে একদল হামলাকারী।

এই ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বিক্ষোভ-প্রতিবাদ

সোহাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হলপাড়ায় এক বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন— “অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন”, “যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে সোহাগ খুন”, “যুবদলের চাঁদাবাজরা, হুঁশিয়ার সাবধান” ইত্যাদি।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন,
"সোহাগ হত্যার কারণে আজ যেমন ছাত্র বন্ধুরা প্রতিবাদ করছে, আওয়ামী লীগের সময়েও ঠিক এভাবেই প্রতিবাদ হতো। বিএনপি নিজেদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।"

অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলও একই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে টিএসসি থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে ডাস চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন,
"আমরা এই হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে ছাত্রদল কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।"

আজকের প্রথা/এআর