শেখ হাসিনার ভাগনি

টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বিতর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ আগস্ট, ২০২৫ এ ৩:১৫ এএম
দুদকের দাবি - বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়েছেন টিউলিপ । ছবি : সংগৃহীত

দুদকের দাবি - বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়েছেন টিউলিপ । ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীর দাবি, শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ধারণ করেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ জানান, টিউলিপ একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছেন এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।

সুলতান মাহমুদের ভাষ্য, টিউলিপের ঠিকানা, একাধিক পাসপোর্ট ও ভোটার তালিকায় নামসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেগুলো আদালতে উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস নিশ্চিত হয়েছে যে এসব নথির অনুলিপি তাদের কাছে রয়েছে। তবে টিউলিপ এ অভিযোগকে ‘হয়রানি ও প্রহসন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং দাবি করেছেন, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক নন। টিউলিপের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্টিফেনসন হারউড জানিয়েছে, তার কোনো দিন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি ছিল না এবং শৈশবকাল থেকে কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ করেননি। তাদের দাবি, উপস্থাপিত নথি জাল। যদিও আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নাগরিকত্বের প্রশ্ন তার বিচারের যোগ্যতায় সরাসরি প্রভাব না ফেললেও এটি বিচার শুরুর আগে বিতর্ক তৈরি করছে।

শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর টিউলিপ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বেআইনিভাবে সরকারি প্লট বরাদ্দের অভিযোগে মামলা হয়। দুদকের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে তারা নিয়ম এড়িয়ে এসব বরাদ্দ নিয়েছেন। শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে কর্তৃত্ববাদ, নির্বাচন কারচুপি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছিল; ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তের পথ খুলে যায়।

বর্তমানে টিউলিপ সিদ্দিক অনুপস্থিতিতেই বিচার চলছে। তিনি দাবি করেছেন, মামলার বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি এবং কোনো প্রমাণ উপস্থাপনও করা হয়নি। তবে দুদক বলছে, পাসপোর্ট ও ভোটার আইডিতে থাকা ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত দল সেসব ঠিকানায় গিয়েছে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের একটি জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, যদিও তা নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। টিউলিপ গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন, যা তার বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এ দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশের পর ঘটে। তিনি সকল অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।