ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ওসমান হাদির চিকিৎসা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সাক্ষাতে ওসমান হাদির ভাই আবু বকর সিদ্দীক, বোন মাসুমা এবং ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বর্তমান শারীরিক অবস্থা, চিকিৎসার অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন তারা। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কীভাবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ওসমান হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি জানান, তার শারীরিক অবস্থার প্রয়োজন অনুযায়ী দেশ বা দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। “সারা দেশ তার জন্য দোয়া করছে। সরকারও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছে,” বলেন তিনি।

ওসমান হাদির বোন মাসুমা আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, ছোটবেলা থেকেই হাদি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ছিল এবং বিপ্লবী চেতনা ধারণ করত। বিদ্রোহী কবিতা ছিল তার প্রিয়। তিনি বলেন, “হাদির একটি ১০ মাসের সন্তান আছে। সে আমাদের পরিবারের মেরুদণ্ড। ওর অনেক কাজ বাকি, ওকে বেঁচে থাকতে হবে।”

ইনকিলাব মঞ্চের নেতা আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেলেও ওসমান হাদি আন্দোলনের মাঠেই সক্রিয় ছিলেন। হামলাকারীর অতীত অপরাধ ও জামিন পাওয়ার প্রক্রিয়া তদন্তের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুত অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের আরেক নেতা ফাতিমা তাসনিম জুমা জুলাই যোদ্ধাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বলেন, এমন হামলা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সে জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, এ নৃশংস হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে পুরো চক্রকে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাক্ষাতে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।