ইসির আচরণবিধির অসংগতি নিয়ে প্রশ্ন শিশির মনিরের

জাতীয় ডেস্ক
জাতীয় ডেস্ক
১৯ নভেম্বর, ২০২৫ এ ৬:৪৪ এএম
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে আচরণবিধির অসংগতি তুলে ধরছেন আইনজীবী শিশির মনির। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে আচরণবিধির অসংগতি তুলে ধরছেন আইনজীবী শিশির মনির। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রণীত আচরণবিধির বিভিন্ন অসঙ্গতি ও অস্পষ্টতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি শিশির মনির। বিশেষ করে পোস্টার ব্যবহারের নিয়ম, আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি প্রদানের এখতিয়ার এবং নির্বাচনি অভিযোগ নিষ্পত্তিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার অনুপস্থিতি নিয়ে তিনি তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে শিশির মনির এসব বিষয় স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ইসির প্রণীত আচরণবিধিতে বহু স্থানে পরস্পরবিরোধী ভাষা ও অস্পষ্ট ব্যাখ্যার ফলে বাস্তব প্রয়োগে জটিলতা তৈরি হতে পারে, যা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে।

পোস্টার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘দ্বৈত নীতি’ নিয়ে তিনি বিশেষভাবে আপত্তি জানান। আচরণবিধির ৭-এর ‘ক’ উপধারায় সম্পূর্ণভাবে পোস্টার নিষিদ্ধ করা হলেও একই ধারার ‘ঘ’ উপধারায় পোস্টারসহ প্রচারসামগ্রীর ওপর পুনরায় বিধিনিষেধ আরোপ করায় তিনি প্রশ্ন তোলেন। তার ভাষায়, “একদিকে পোস্টার নিষিদ্ধ বলা হচ্ছে, আবার অন্যদিকে পোস্টার ব্যবহারের শর্ত উল্লেখ করা হচ্ছে—এটি ইসির নীতিগত দ্বিধার পরিচয়।”

এছাড়া প্রতীক বরাদ্দের পর সব প্রার্থীর উপস্থিতিতে নির্বাচনি ইশতেহার পাঠ ও আচরণবিধি প্রতিপালনের অঙ্গীকারকে ইসির ঐচ্ছিক বিধান থেকে বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান তিনি। তার মতে, এটি প্রার্থীদের মধ্যে সৌহার্দ্য তৈরি করবে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক সংস্কৃতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

শাস্তি আরোপের বিধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আচরণবিধিতে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান থাকলেও কোন কর্তৃপক্ষ শাস্তি আরোপ করবে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। এতে আইনি প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি প্রার্থীর বাইরে অন্য কারও অপরাধের জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে দায়ী করার বিধানকেও তিনি অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেন।

নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণকে শিশির মনির অত্যাবশ্যক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “অভিযোগ নিষ্পত্তিতে সময়সীমা না থাকলে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জট তৈরি হবে এবং বিচারপ্রত্যাশী পক্ষ অনিশ্চয়তায় পড়বে।” শত শত অভিযোগ একসঙ্গে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও তিনি সময়সীমা বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।