রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষের ৫টি সম্ভাব্য পথ


ছবি: সিএনএন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান কীভাবে ঘটতে পারে, তা নিয়ে সম্প্রতি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত কোনো স্থায়ী শান্তির ইঙ্গিত দেখা না গেলেও কিছু সম্ভাব্য পরিণতির দিক নির্দেশ করছে তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠককে ঘিরে আলোচনার ঝড় উঠেছে। উভয় পক্ষের অভিমত—এই বৈঠক যুদ্ধের গতিপথ পাল্টে দিতে পারে। ট্রাম্প মনে করেন, তার ব্যক্তিগত প্রভাব ও কূটনৈতিক কৌশলে যুদ্ধ থামানো সম্ভব। অপরদিকে, পুতিন এখনো নিজ অবস্থানে অনড়। পুতিন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং পরিবর্তে ছোট পরিসরের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। এতে বোঝা যায়, রাশিয়া এখনো যুদ্ধ থামানোর পক্ষপাতী নয়। তবে যুদ্ধের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিএনএন পাঁচটি সম্ভাব্য দৃশ্যপট তুলে ধরেছে।
প্রথমত, পুতিন যদি হঠাৎ করেই নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হন, তবে সেটি হবে এক বিস্ময়কর পরিবর্তন। কিন্তু চলমান প্রেক্ষাপটে সেটি একেবারেই অসম্ভব মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দ্বিতীয়ত, রাশিয়া যদি শরতের আগে কিছু সামরিক সাফল্য অর্জন করে, তবে শীতকালে কিছুটা ‘বিরতি’ নিয়ে কূটনৈতিক পথে এগোতে পারে। এ সময় পুতিন ইউক্রেনে নির্বাচন প্রসঙ্গও তুলতে পারেন, যাতে করে জেলেনস্কির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা সম্ভব হয়। তৃতীয় সম্ভাবনা, ইউক্রেন যদি পশ্চিমা সামরিক সহায়তায় শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং রাশিয়ার অগ্রযাত্রা থেমে যায়, তাহলে পুতিন আলোচনায় বসতে বাধ্য হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ন্যাটোর সহায়তাও মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
চতুর্থত, যদি ইউক্রেন আন্তর্জাতিক সমর্থন হারায় এবং ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক রাশিয়ার অনুকূলে যায়, তবে ন্যাটোও এককভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হতে পারে। এতে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব চরম সংকটে পড়বে। পঞ্চম ও শেষ দৃশ্যপটে বলা হয়েছে, রাশিয়া যদি সীমিত অগ্রগতির জন্য ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়, এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় তার অর্থনীতি চাপে পড়ে, তবে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষে নেতৃত্ব দুর্বল হতে পারে। এ অবস্থায় সোভিয়েত ইউনিয়নের আফগানিস্তান অভিযানের মতো ইতিহাস পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
সিএনএন-এর ভাষ্য অনুযায়ী, এসব বিকল্পের কোনোটিই ইউক্রেনের জন্য আদর্শ নয়। তবে এই যুদ্ধের শেষ নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির জটিল সমীকরণের উপর—এবং ইউক্রেনকে উপেক্ষা করে কোনো সমাধানই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।