ইসরাইলি হামলায় গাজায় আরও ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ আগস্ট, ২০২৫ এ ৬:৫২ এএম
গাজা   ছবি : সংগৃহীত

গাজা ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ ২৬টি দেশের তীব্র নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি আগ্রাসনে আরও ৭৩ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার চিকিৎসকরা। নিহতদের মধ্যে দুজন ক্ষুধাজনিত কারণে মারা গেছেন—তাদের একজন মাত্র ছয় বছরের শিশু। এটি ইসরাইলি অবরোধের মানবিক বিপর্যয়ের আরেক করুণ উদাহরণ।

আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতদের মধ্যে ১৯ জন গুলি খেয়ে মারা যান, যখন তারা খাদ্য সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা করছিলেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৬১ হাজার ৫৯৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৫৪ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ ২৬টি দেশ গাজার “অকল্পনীয় মাত্রার” মানবিক দুর্ভোগের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দুর্ভিক্ষ বন্ধ, অবরোধ প্রত্যাহার এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে তারা ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষকে ইসরাইলের “মারণাস্ত্র” হিসেবে ব্যবহারের তীব্র সমালোচনা করে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদানের দাবি জানায়।

অবস্থার ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে উত্তর গাজার জিকিম ক্রসিং থেকে বেঁচে ফেরা সাইয়্যেদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, “চারপাশে গুলি চলছিল, আমরা বুঝতেই পারছিলাম না কী হচ্ছে। আমাদের সামনে মানুষ মারা যাচ্ছিল, গুলি পায়ের মাঝ দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল।” একইভাবে মোহাম্মদ আবু নাহল জানান, খাবার সংগ্রহের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে এগোতে হয়েছে, যেখানে চারপাশে লাশ পড়ে ছিল।

গাজার সরকারি তথ্য দপ্তর বলেছে, ইসরাইল ৪৩০টির বেশি খাদ্যপণ্যের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে এবং ৪৪টি খাদ্য ব্যাংক ও ৫৭টি খাদ্য বিতরণকেন্দ্র ধ্বংস করেছে। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতাকে গাজার চলমান “গণহত্যা”র অন্যতম কারণ বলে অভিহিত করেছে।