ইসরাইলি অবরোধে গাজায় অনাহারে একদিনে ১৫ জনের করুণ মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ জুলাই, ২০২৫ এ ৫:১৭ এএম
ইসরাইলি অবরোধে গাজায় খাদ্য সংকট - সহায়তা কেন্দ্র ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত। ছবি: সংগৃহীত

ইসরাইলি অবরোধে গাজায় খাদ্য সংকট - সহায়তা কেন্দ্র ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অনাহারে মারা গেছেন অন্তত ১৫ জন। মঙ্গলবারের মধ্যে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। মৃতদের মধ্যে ছয় সপ্তাহ বয়সি এক নবজাতক শিশুও রয়েছে, যার নাম ইউসুফ আবু জাহির। শিশুটির মৃত্যু হয় দুধের অভাবে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, উপত্যকাটিতে দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্য সংকট চলমান থাকলেও সম্প্রতি এই সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইউসুফের চাচা আদহাম আল-সাফাদি রয়টার্সকে বলেন, “বাজারে কোথাও দুধ নেই, আর যদি পাওয়া যায়, একটি ছোট টিনের দাম পড়ে ১০০ ডলার পর্যন্ত।”

মঙ্গলবার অনাহারে মারা যাওয়া অন্যান্যদের মধ্যে আরও তিন শিশু রয়েছে। তাদের একজন, ১৩ বছর বয়সি আব্দুলহামিদ আল-ঘালবান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসনের পর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০১ জন অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৮০ জনই শিশু। এই মৃত্যুর বেশিরভাগই ঘটেছে গত কয়েক সপ্তাহে।

ইসরাইল গত মার্চে গাজায় সব ধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিলে খাদ্য মজুত সম্পূর্ণরূপে ফুরিয়ে যায়। মে মাসে সীমিত আকারে সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও তা ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) এর মাধ্যমে, যেখানে জাতিসংঘের কোনও ভূমিকাই ছিল না।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে গুলি চালিয়ে এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “এই সহায়তা ব্যবস্থা একপ্রকার নৃশংস মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।” তবে ইসরাইল দাবি করেছে, সহায়তা ছিনিয়ে নিচ্ছে হামাস, যদিও তারা এর পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।