দীর্ঘ অসুস্থতার পর ৮৮ বছরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ বাসন্তী দেবীর


শোকের ছায়া টেলিপাড়ায় - কিংবদন্তি অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টার্জি প্রয়াত হয়েছেন। ছবি : সংগৃহীত
কলকাতার বর্ষীয়ান ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টার্জি প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। জানা গেছে, তিনি পেটের ক্যানসারসহ একটি কিডনি অচল অবস্থায় ভুগছিলেন এবং গত ছয় মাস ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন।
প্রায় সাত দশকের দীর্ঘ অভিনয়জীবনে বাসন্তী চট্টার্জি বাংলা নাটক ও চলচ্চিত্র জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন, ছবি বিশ্বাসের মতো কিংবদন্তি শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। থিয়েটারের মাধ্যমে অভিনয়ে যাত্রা শুরু হলেও পরে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ধারাবাহিকে সমান সাফল্য অর্জন করেন। সম্প্রতি তিনি ‘গীতা এলএলবি’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছিলেন।
এই ধারাবাহিকের সহ-অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় জানান, শেষ সময়গুলোতে বাসন্তী দেবী প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছিলেন। তাঁর মতে, প্রয়াণের মাধ্যমে তিনি কষ্ট থেকে মুক্তি পেয়েছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি আবারও সেটে ফিরলেও পাঁজরের চোটে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং সেখান থেকেই অভিনয় থেকে সরে দাঁড়ান।
এপ্রিল মাসে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার সময় আমার বয়স ছিল প্রায় ১৫। এখন হয়ে গেল ৭০ বছরের বেশি। কত স্মৃতি জমা হয়ে আছে!” অভিনয় জীবনের নানা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি ছিলেন আবেগপ্রবণ। বাসন্তী চট্টার্জির প্রয়াণে টেলিপাড়ায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় তাঁর অসুস্থতার সময় আর্থিক সহায়তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। পরিচালক স্নেহাশিস চক্রবর্তীও একসময় সহায়তা করেছিলেন তাঁকে। ‘ঠগিনী’ ও ‘আমি সে ও সখা’সহ একাধিক চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
অভিনেত্রীর দীর্ঘদিনের গৃহকর্মী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, নতুন করে কোনো অসুখ দেখা দেয়নি, তবে গত ছয় মাস তিনি প্রচণ্ড যন্ত্রণা সহ্য করেছেন। তাঁর প্রার্থনা—এবার যেন বাসন্তী দেবী চিরশান্তি লাভ করেন।