২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হলো জুলাই শহীদ আনাসের চিঠি


জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাস—যার লেখা চিঠি স্থান পেয়েছে ২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে। ছবি: সংগৃহীত
আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হচ্ছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের লেখা একটি আবেগঘন চিঠি। রাজধানী ঢাকায় জুলাই আন্দোলনে অংশ নিতে যাওয়ার আগে মা–বাবার উদ্দেশে লেখা ওই চিঠিটি অষ্টম শ্রেণির বাংলা বই সাহিত্য কণিকা-এর পেছনের প্রচ্ছদে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ভূমিকা ও আত্মত্যাগ তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান আনাস ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। সরকার পতনের কয়েক ঘণ্টা আগে সংঘটিত ওই ঘটনায় আনাস শহীদ হন, যা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বেদনাবিধুর অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়।
ঘটনার দিন সকালে আনাস ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে পড়ার টেবিলে মা–বাবার উদ্দেশে একটি চিঠি রেখে ঘর থেকে বের হন। পরে নাশতার সময় তাকে ঘরে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তার কক্ষে গিয়ে চিঠিটি খুঁজে পান। আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, দেশপ্রেম এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আত্মত্যাগের মানসিকতা উঠে আসে ওই লেখায়, যা সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
শহীদ আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি। তার ভাষায়, আনাসের চিঠি পাঠ্যবইয়ে স্থান পাওয়া মানে শুধু একটি পরিবারের নয়, বরং জুলাইয়ে শহীদ ও আহত সবার কণ্ঠস্বর শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী জানান, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ ও ভূমিকা তুলে ধরতেই এই চিঠি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টার নির্দেশনায় নেওয়া এ উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের বাস্তব প্রেক্ষাপট জানতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ইতিহাসমনস্ক ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।










