মাদরাসা সুপার জানেই না, পরীক্ষার্থী পাস করেনি কেউ


প্রতিষ্ঠানটির নাম তাওয়াকুছা তিলাতারা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ছবি
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কেউই পাস করেনি। কাংশা ইউনিয়নের তাওয়াকুছা তিলাতারা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে অংশ নেওয়া চার শিক্ষার্থীর সবাই ফেল করেছে।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাদরাসায় ১৪ জন শিক্ষক ও ৩ জন স্টাফ রয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানে নিয়মিত পড়াশোনা হয় না এবং শিক্ষকরা অনেকটাই অমনোযোগী।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর জেলায় এবার দাখিল পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৪৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। জেলার ১০৫টি দাখিল মাদরাসা থেকে মোট ৩ হাজার ৩৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন, যার মধ্যে ১ হাজার ৫১৩ জন পাস করেছেন এবং মাত্র ২৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। কিন্তু তাওয়াকুছা তিলাতারা মাদরাসার ফলাফল পুরোপুরি শূন্য।
স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রহমত বলেন, “আমার বাড়ির পাশেই মাদরাসাটি। এখানে তেমন কোনো পড়াশোনা হয় না। শুধু নামেই চলে। কিছুদিন আগে শুনেছি নতুন ভবন হবে। কিন্তু ভবন দিয়ে কী হবে, যদি শিক্ষার মান না বাড়ে?”
মাদরাসার সুপার মোতাবেক বলেন, “ফলাফল খারাপ কেন হলো, সে বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।” গত বছরের ফলাফল সম্পর্কেও তিনি অসচেতন ছিলেন এবং ফোনে প্রশ্ন করা হলে হঠাৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
প্রতিষ্ঠানটির এডহক কমিটির সভাপতি এবং ঝিনাইগাতীর ইউএনও মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “৫ আগস্টের পর আমি পদাধিকারবলে উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হয়েছি। যেহেতু মাদরাসাটি এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি, তাই নিয়মিত ক্লাস হয় না। তবে এখন থেকে আমি নিয়মিত মনিটর করব। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য।”
শিক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, শিক্ষার মান নিশ্চিত না করে অবকাঠামো নির্মাণ শিক্ষার্থীদের কোনো কাজে আসে না। প্রশাসন ও শিক্ষা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল নজরদারি না থাকলে এমন ফলাফল ভবিষ্যতেও দেখা যাবে।
আজকের প্রথা/ইতি