উদ্যোক্তা না চাকরি-কোন পথ বেছে নেবেন তরুণরা?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩ আগস্ট, ২০২৫ এ ৩:৪৫ এএম
তরুণদের সিদ্ধান্ত-সাহসী উদ্যোগ নাকি নিরাপদ চাকরি।  ছবি : সংগৃহীত

তরুণদের সিদ্ধান্ত-সাহসী উদ্যোগ নাকি নিরাপদ চাকরি। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের কর্মজীবী তরুণদের সামনে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— “চাকরি করব, না নিজে কিছু শুরু করব?” এই দ্বিধার সঙ্গে জড়িয়ে আছে জীবনের নিরাপত্তা, আত্মপরিচয় গড়ার স্বপ্ন ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ।

শনিবার, ৩ আগস্ট সকালে, এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দেশে প্রতিবছর গড়ে ২০ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করেন। কিন্তু সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সুযোগ তৈরি হয় মাত্র কয়েক লাখের জন্য। ফলে অনেকেই চাকরির বাইরে বিকল্প ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন।

চাকরি মানে নিরাপত্তা, নিয়মিত বেতন, পেনশন, সামাজিক স্বীকৃতি। বিশেষ করে সরকারি চাকরি এখনো অনেক তরুণের কাছে স্বপ্নের মতো। কিন্তু এর সঙ্গে রয়েছে কিছু সীমাবদ্ধতা— সৃষ্টিশীলতার ঘাটতি, পদোন্নতিতে ধীরগতি ও স্বাধীনতার অভাব।

অন্যদিকে, উদ্যোক্তা হওয়া মানে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। এর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা, সৃষ্টিশীলতা, আয় বৃদ্ধির সুযোগ এবং অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি। তবে এর পেছনেও আছে ঝুঁকি, অনিশ্চয়তা ও বাধা।

তরুণরা যখন উদ্যোক্তা হতে চান, তখন তারা অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হন— ‘তুমি কি পারবে?’, ‘পরিবার মানবে?’, ‘পুঁজি কোথা থেকে আসবে?’ এসব প্রশ্ন তাদের আত্মবিশ্বাসে আঘাত করে।

এই দ্বিধার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক চাপ, আর্থিক সীমাবদ্ধতা, ব্যর্থতার ভয় এবং যোগ্য মেন্টরের অভাব। ফলে অনেকেই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সাহস করে সামনে এগোতে পারেন না।

তবে উদ্যোক্তা বনাম চাকরি— এটা আসলে প্রতিযোগিতা নয়। কেউ চাকরি করে অভিজ্ঞতা ও মূলধন তৈরি করে পরে উদ্যোগ শুরু করতে পারেন। আবার উদ্যোগ ব্যর্থ হলে ফিরে যেতে পারেন চাকরিতে।

এই বাস্তবতায় দরকার একটি সহায়ক পরিবেশ। রাষ্ট্রের উচিত উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ, কর সুবিধা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও ইনোভেশন ল্যাব চালু করা।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে হলে তরুণদের দ্বিধা নয়, সুযোগ দিতে হবে। তাদের স্বপ্নকে সম্মান জানাতে হবে এবং পথের আলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে।