দ্রুততর ক্লাউড সংযোগে যৌথ সেবা চালু করল অ্যামাজন–গুগল

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
১ ডিসেম্বর, ২০২৫ এ ৯:০৪ এএম
দ্রুততর ও নিরাপদ সংযোগ নিশ্চিত করতে অ্যামাজন–গুগলের নতুন মাল্টিক্লাউড উদ্যোগ। ছবি সংগৃহীত

দ্রুততর ও নিরাপদ সংযোগ নিশ্চিত করতে অ্যামাজন–গুগলের নতুন মাল্টিক্লাউড উদ্যোগ। ছবি সংগৃহীত

ইন্টারনেট সেবায় সামান্য বিঘ্নও এখন বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। এমন বাস্তবতার মধ্যে দ্রুততর ও নির্ভরযোগ্য সংযোগ নিশ্চিত করতে নতুন মাল্টিক্লাউড নেটওয়ার্কিং সেবা চালু করেছে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যামাজন ও গুগল। রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে দুটি প্রতিষ্ঠান জানায়, গ্রাহকের বাড়তে থাকা চাহিদাই তাদের এই উদ্যোগ নিতে অনুপ্রাণিত করেছে।

এই নতুন সেবার মাধ্যমে ব্যবসায়িক ব্যবহারকারীরা এখন মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডব্লিউএস) ও গুগল ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ব্যক্তিগত, উচ্চগতির সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন। আগে এ ধরনের সংযোগ স্থাপনে সপ্তাহ লেগে যেত। ক্লাউডভিত্তিক সেবা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর প্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণের কারণে উচ্চগতির নেটওয়ার্ক বর্তমানে অত্যাবশ্যক হয়ে উঠেছে।

গত ২০ অক্টোবর এডব্লিউএস–এ বড় ধরনের বিভ্রাট দেখা দেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই এই নতুন সেবা ঘোষণা করা হলো। ওই বিভ্রাটে বিশ্বের বহু ওয়েবসাইট অচল হয়ে পড়ে। জনপ্রিয় অ্যাপ স্ন্যাপচ্যাট ও রেডিটসহ বহু সেবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ ছিল। বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান পরামিত্রিক্স জানিয়েছে, ওই ঘটনার ক্ষতি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য দাঁড়াতে পারে প্রায় ৫০ কোটি থেকে ৬৫ কোটি ডলার।

এই অভিজ্ঞতার পর সংযোগের নির্ভরযোগ্যতা বাড়াতে দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে নতুন প্রযুক্তিতে হাত মিলিয়েছে। অ্যামাজনের ‘ইন্টারকানেক্ট–মাল্টিক্লাউড’ প্রযুক্তিকে গুগলের ‘ক্রস–ক্লাউড ইন্টারকানেক্ট’ সুবিধার সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। ফলে দুই ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের নেটওয়ার্ক আরও সমন্বিতভাবে কাজ করবে, এবং ব্যবহারকারীরা নির্বিঘ্নে ডেটা ও অ্যাপ্লিকেশন আদান–প্রদান করতে পারবেন। এডব্লিউএস নেটওয়ার্ক সেবার সহ–সভাপতি রবার্ট কেনেডি বলেছেন, এই সহযোগিতা মাল্টিক্লাউড ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে।

গুগল ক্লাউডের ক্লাউড নেটওয়ার্কিং বিভাগের সহ–সভাপতি রব এন্স বলেন, গ্রাহকেরা এখন দুই ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের মধ্যে আগের চেয়ে দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ তথ্য বিনিময় করতে সক্ষম হবেন। ইতিমধ্যে সেলসফোর্স এই নতুন সেবা ব্যবহার শুরু করেছে বলে গুগল ক্লাউড জানিয়েছে। বিশ্বজুড়ে ক্লাউড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস শীর্ষস্থানে রয়েছে, যার পরেই রয়েছে মাইক্রোসফটের অ্যাজিউর ও গুগল ক্লাউড।

ইন্টারনেট ব্যবহার, ভিডিও স্ট্রিমিং, অনলাইন ব্যবসা ও এআই–নির্ভর সেবার দ্রুত বিকাশের কারণে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো নেটওয়ার্ক অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। শুধু তৃতীয় প্রান্তিকেই অ্যামাজনের ক্লাউড ব্যবসার আয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা গুগল ক্লাউডের আয়ের দ্বিগুণেরও বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক ব্যবসায় মাল্টিক্লাউড ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। একাধিক ক্লাউডে কাজ করলে ঝুঁকি কমে, ডেটা ব্যবস্থাপনা হয় আরও নমনীয়। ফলে অ্যামাজন–গুগলের এই নতুন উদ্যোগ ভবিষ্যতের ডিজিটাল অবকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে।