কারা চাইছেন সেফ এক্সিট-শিগগিরই তালিকা প্রকাশ করবে এনসিপি

রাজনীতি ডেস্ক
রাজনীতি ডেস্ক
১৪ অক্টোবর, ২০২৫ এ ৩:৫৭ এএম
ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সেফ এক্সিট ইস্যুতে বক্তব্য দিচ্ছেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সেফ এক্সিট ইস্যুতে বক্তব্য দিচ্ছেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থান খুঁজছেন—এমন মন্তব্য করে এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম রাজনীতির অঙ্গনে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তার এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। খোদ উপদেষ্টারাই নানা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিতর্ককে আরও উস্কে দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে অন্তত পাঁচজন উপদেষ্টা প্রকাশ্যে নাহিদ ইসলামের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন এবং কেউ কেউ তার মন্তব্যকে ‘অতিরঞ্জিত’ বলেও অভিহিত করেছেন।

এনসিপি জানায়, তাদের হাতে এমন উপদেষ্টাদের নামের তালিকা রয়েছে যারা সরকারের পদ ছাড়তে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপদে সরে যেতে চান। দলটি জানিয়েছে, এই তালিকা শিগগিরই জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে। ৪ অক্টোবর একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, “উপদেষ্টাদের অনেকেই সেফ এক্সিটের চিন্তা করছেন এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেছেন।” তার এই বক্তব্য মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন বলেন, “নাহিদ ইসলাম সরকারের ভেতর থেকে কাজ করেছেন এবং তিনি অনেক কিছু প্রত্যক্ষ করেছেন। তার মন্তব্য নিছক কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, বরং বাস্তবতার প্রতিফলন।” তিনি আরও জানান, কিছু উপদেষ্টার নিষ্ক্রিয় ভূমিকা এবং দায়িত্বহীনতা দলের ভেতর হতাশা সৃষ্টি করছে।

এনসিপি নেতাদের দাবি, এখনো দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে পুরোনো দলীয় প্রভাব বহাল রয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের রেখে যাওয়া মিডিয়া ও প্রশাসনিক নেটওয়ার্ক নতুন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে সক্রিয়। এসব প্রভাবশালী মহল বিশেষ করে ছাত্র নেতৃত্বকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। অথচ দেশের নানা স্থানে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার চললেও তারা নীরব।

এদিকে নাহিদ ইসলামের মন্তব্যের জেরে উপদেষ্টাদের মধ্যে আলোচিত হয়েছেন ড. আসিফ নজরুল, ফাওজুল কবির খান, লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও আ ফ ম খালিদ হোসেন। বিশেষ করে পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান নাহিদ ইসলামকে তার বক্তব্যের প্রমাণ প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।

জুলাই আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও একই মত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “কিছু উপদেষ্টা শুধু দায়সারা দায়িত্ব পালন করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নিজেদের সেফ এক্সিট নিশ্চিত করতে চান, কিন্তু এভাবে কোনো সরকার টেকসই হতে পারে না।”