নিরাপত্তা সংকট মোকাবিলায়

নাশকতা ঠেকাতে মাঠে থাকবে জামায়াত-এনসিপিসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী দলগুলো

রাজনীতি ডেস্ক
রাজনীতি ডেস্ক
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ এ ৩:৫৭ এএম
রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মীরা । ছবি: সংগৃহীত

রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মীরা । ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হবে। এই রায়কে কেন্দ্র করে নাশকতার শঙ্কা তৈরি হওয়ায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী দলগুলো মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ যাতে কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, সে লক্ষ্যেই তাদের এই সতর্ক অবস্থান। বিএনপিও বলেছে, জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ করবে।

ফ্যাসিবাদ বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেন, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশে দমন-পীড়নের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের দাবি, হাজারো মানুষ গুম ও হত্যার শিকার হয়েছে, আর ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। তারা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলেও নাশকতা ও সহিংসতা থামেনি। ১৩ নভেম্বর ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ সহিংসতা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। আজকের রায়কে ঘিরেও একই ধরনের নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে বলেই তারা রাজপথে সতর্কভাবে অবস্থান নেবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনার গণহত্যার বিরুদ্ধে যে বিচার চলছে, তার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দেশে চরম অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। একটি মহল আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, যা রুখে দাঁড়াতে হবে।” তিনি আরও বলেন, ছাত্রদের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ তৈরি হয়েছে, তা যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হতে না পারে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, তারা সারা দেশে সতর্ক অবস্থানে থাকবেন এবং কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হলে প্রতিহত করবেন।

৮-দলীয় জোটের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নাশকতা প্রতিরোধের দায়িত্ব সরকারের হলেও আমাদের নেতাকর্মীরা আগের মতোই মাঠে থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তারা পাহারা দেবে। ফ্যাসিস্ট শক্তিকে আর মাথাচাড়া দিতে দেওয়া হবে না।”

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব। নাশকতার আশঙ্কা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা প্রতিহত করবে। রাজনৈতিক দলগুলোও সতর্ক অবস্থানে থাকবে যেন কোনো হুমকি সৃষ্টি না হয়।”

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “বিচার প্রক্রিয়াকে আমরা আইনগত বিষয় হিসেবেই দেখি। তবে যদি কেউ নাশকতা বা বিচার বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা জনমত গড়ে তুলব ও প্রতিহত করব।”

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক-উস-সালেহীন বলেন, “ফ্যাসিবাদীদের নাশকতা রোধে এনসিপির নেতাকর্মীরাও মাঠে থাকবে।”

১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, “আমরা যার যার অবস্থান থেকে সতর্ক থাকব। আগুন সন্ত্রাসের মতো ঘটনা যাতে আর সংঘটিত না হতে পারে, সে বিষয়ে আমরা জনপদের নিরাপত্তা রক্ষা করব।”

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, “সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। তারা মাঠে নামার চেষ্টা করলে জনগণই তাদের প্রতিহত করবে। আমরা রাজপথে থাকব যাতে তারা কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।”