প্রাথমিকের ৩২ হাজার শিক্ষক পদোন্নতি পাচ্ছেন না মামলার জটিলতায়


কুতুবদিয়ার একটি বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
সারা দেশের ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকলেও চলমান মামলার কারণে সমান সংখ্যক সহকারী শিক্ষককে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না—রোববার (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলায় স্কুল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, যিনি দ্রুত মামলাটির নিষ্পত্তির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।
অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, পদোন্নতি-সংক্রান্ত মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় সারাদেশে প্রশাসনিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। “৩২ হাজার স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। অথচ সমান সংখ্যক সহকারী শিক্ষক পদোন্নতির অপেক্ষায়। মামলাটি শেষ করতে পারলে বহুদিনের সমস্যা দূর হবে,” মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার দুপুরে কৈয়ারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, এই মামলার জট না কাটলে উপজেলা থেকে জেলা পর্যন্ত প্রশাসনিক কাঠামোতে স্থবিরতা তৈরি হচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে দ্রুত সমাধান হলে স্কুল পরিচালনায় শৃঙ্খলা ফিরবে।
উপদেষ্টা জানান, দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিদ্যালয়ে তীব্র শিক্ষকসংকট রয়েছে। তিনি বলেন, “কুতুবদিয়ার বেশ কয়েকটি স্কুল ঘুরে দেখলাম—শিক্ষকের ঘাটতি স্পষ্ট। নতুন শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে এমন অঞ্চলগুলোর সংকট দূর করা হবে।”
এর আগে তিনি উত্তর লেমশীখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পূর্ব ধুরুং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ, অবকাঠামো ও অফিসকক্ষ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে কুতুবদিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাতিঘর ও সৈকতও ঘুরে দেখেন তিনি। এসব পরিদর্শনে স্থানীয় শিক্ষাব্যবস্থার নানা ঘাটতি তার নজরে আসে।
পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টার সহধর্মিণী রমা সাহা, ঢাকা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী রেজা, কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীন মিয়া, কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যথোয়াইপ্রু মারমা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সাকিব উল হাসান, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুসলিম উদ্দিনসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা।
অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানান, প্রাথমিকের প্রশাসনিক কাঠামো স্বাভাবিক করতে পদোন্নতি-সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি এবং নতুন নিয়োগ—দুটি বিষয়ই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তিনি আশা করেন, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ পুরো প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আসবে।









