অবিভক্ত বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং উপমহাদেশের অসাধারণ জননেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের আজ ১৫৩তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৭৩ সালের এই দিনে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কৃষক ও সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় আজীবন সংগ্রাম করে তিনি মানুষের মনে অমর হয়ে আছেন। রাজনৈতিক ও জনমানসে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘শেরে বাংলা’ ও ‘হক সাহেব’ নামে।

বাংলার কৃষক সমাজের দুঃখ ও বঞ্চনা মোচনের লক্ষ্য নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ঋণ সালিশি আইনসহ কৃষকবান্ধব নানা আইন প্রণয়ন করেন। কৃষির আধুনিকায়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন ‘দি বেঙ্গল অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’, যা পরবর্তীতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় — দেশের কৃষিক্ষেত্রে যা আজও অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

১৯৩৫ সালে কলকাতার মেয়র এবং ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরবর্তীকালে ১৯৫৩ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সঙ্গে নিয়ে গঠন করেন যুক্তফ্রন্ট, যা তৎকালীন পাকিস্তান শাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে নতুন দিক নির্দেশনা দেয়।

১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী এবং ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৫৬ সালের ২৪ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর পদে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৫৮ সালে রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর নেন শেরে বাংলা। একই বছরের ২৭ অক্টোবর তাকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘হিলাল-ই-পাকিস্তান’ প্রদান করা হয়।

১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ৮৮ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক তিন নেতার মাজারে শায়িত আছেন তিনি — যেখানে তার সঙ্গে সমাহিত আছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও খাজা নাজিমুদ্দিন।