ইমরান খানের খোঁজ না পাওয়ায় পাকিস্তানজুড়ে তীব্র উত্তেজনা


রাওয়ালপিন্ডিতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ, ইমরান খানের খোঁজ না পাওয়ায় উত্তেজনা বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া এবং তাকে কেন্দ্র করে মৃত্যু–গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তার কোনো সন্ধান না পাওয়ায় পরিবার, রাজনৈতিক দল পিটিআই এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্রীয় সরকার এখনো পর্যন্ত তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য দেয়নি।
রাওয়ালপিন্ডিতে ইমরান খানের অবস্থান জানতে এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পিটিআই কর্মীরা বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের ডাক দেয়। দলটির অভিযোগ, ইমরান খানকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে এবং পরিবারের সদস্যদেরও তার সঙ্গে দেখা করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে শহরজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা দেখা দিলে স্থানীয় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে ১৪৪ ধারা জারি করে।
ডেপুটি কমিশনার হাসান ওয়াকার চীমা জানান, ১ থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাওয়ালপিন্ডিতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ, শোভাযাত্রা এবং পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে। এছাড়া অস্ত্র, ভারী লাঠি, পেট্রোল বোমা, গুলতি বা সহিংসতায় ব্যবহার হতে পারে এমন যেকোনো সরঞ্জাম বহন করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মোটরসাইকেলের পেছনে আরোহী নেওয়া, মাইক্রোফোন বা লাউডস্পিকার ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
প্রশাসনের দাবি, এই পদক্ষেপ কেবল জননিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থেই নেওয়া হয়েছে। তবে পিটিআই অভিযোগ করেছে যে, ইমরান খানের অবস্থান গোপন করার জন্যই সরকারের পক্ষ থেকে এসব কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দলটির একজন সিনিয়র নেতা বলেন, “আমরা আজও জানি না খানের প্রকৃত অবস্থা কী। এতদিন কেউ তাকে দেখতে না পারাটা গভীর উদ্বেগের কারণ।”
এদিকে সাধারণ পাকিস্তানিদের মধ্যেও ইমরান খানের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে সরকারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। কেউ কেউ বলছেন, সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে অদৃশ্য করে রাখা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ উদাহরণ।
বর্তমানে ইমরান খান কোথায় আছেন এবং তার প্রকৃত অবস্থা কী—এ নিয়ে সরকারের আনুষ্ঠানিক স্পষ্ট ব্যাখ্যা না পাওয়া পর্যন্ত উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। পিটিআই জানিয়েছে, প্রয়োজন হলে তারা আইনি পদক্ষেপ নেবে এবং আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।









