খালিদ বিন আল-ওয়ালিদের বায়োপিক বানাচ্ছেন ‘গেম অব থ্রোনস’ পরিচালক


খালিদ বিন আল-ওয়ালিদকে নিয়ে সৌদি অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ‘আনব্রোকেন সোর্ড’। ছবি: সংগৃহীত
সৌদি আরবের অর্থায়নে ঐতিহাসিক মুসলিম সেনাপতি খালিদ বিন আল-ওয়ালিদকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের বায়োপিক চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কে—সৌদি সরকারের সমর্থিত প্লেমেকার স্টুডিওস, কী—ঐতিহাসিক অ্যাকশনধর্মী ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র নির্মাণ, কখন—ঘোষণা হয়েছে সোমবার “রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল”-এ, কোথায়—রিয়াদের কিদ্দিয়া অঞ্চলে, কেন—সৌদি চলচ্চিত্র শিল্পকে বৈশ্বিক পর্যায়ে পৌঁছাতে, কীভাবে—আধুনিক স্টুডিও অবকাঠামো ও আন্তর্জাতিক নির্মাতাদের মাধ্যমে।
সম্প্রতি রিয়াদের পশ্চিমে কিদ্দিয়া শহরে ৫০ একরের বেশি জায়গাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত প্লেমেকার স্টুডিওসের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। এই স্টুডিওকে সৌদি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি বড় মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখানেই প্রথম বড় চলচ্চিত্র হিসেবে “আনব্রোকেন সোর্ড” নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসভিত্তিক সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোর একটি বলে বিবেচিত।
ছবিটির পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন হলিউডের অভিজ্ঞ নির্মাতা আলিক সাখারভ। তিনি এর আগে “গেম অব থ্রোনস”, “হাউস অব কার্ডস” এবং “ওজার্ক”-এর মতো জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক সিরিজের কাজ করেছেন। প্রযোজনা দলে যুক্ত হয়েছেন ব্রিটিশ প্রযোজক রিচার্ড শার্কি, যিনি “হাউজ অব দ্য ড্রাগন” সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য পরিচিত। সংশ্লিষ্টদের মতে, এটি হবে আন্তর্জাতিক মানের একটি সম্পূর্ণ ইংরেজিভাষী ঐতিহাসিক অ্যাকশন চলচ্চিত্র।
সপ্তম শতকের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র ঐতিহাসিক সেনানায়ক খালিদ বিন আল-ওয়ালিদ। মরুভূমির প্রতিকূল পরিবেশকে পেছনে ফেলে তার সামরিক অভিযানের পটভূমি এবং সেই সময়কার প্রধান শক্তিগুলোর সঙ্গে সংঘাতের প্রেক্ষাপট চলচ্চিত্রে ফুটিয়ে তোলা হবে। বর্তমানে ছবিটির প্রি-প্রোডাকশন পর্যায়ে ২০০ জনের বেশি কর্মী কাজ করছেন এবং ২০২৬ সালের শুরুর দিকে মূল চিত্রগ্রহণ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
কিদ্দিয়া ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত প্লেমেকার স্টুডিওস শুধু সৌদি নয়, বিশ্বজুড়ে নির্মাতাদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্য নিয়েছে। বর্তমানে সেখানে দুটি আধুনিক সাউন্ডস্টেজ চালু রয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে আরও দুটি সাউন্ডস্টেজ নির্মাণের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি বিশাল ব্যাকলট নির্মাণ করে বড় বাজেটের আন্তর্জাতিক প্রজেক্টের উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।
বিদেশি প্রযোজকদের আকৃষ্ট করতে সৌদি আরব ৪০ শতাংশ পর্যন্ত প্রোডাকশন রিবেট সুবিধা দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এখানেই ভিএফএক্স, পোস্ট-প্রোডাকশন ও মিউজিক স্টুডিও স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে অন্তত ১০০টি চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং মধ্যপ্রাচ্যকে বৈশ্বিক চলচ্চিত্র নির্মাণের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
বর্তমানে এই প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে সৌদি আরব নতুন করে বিশ্ব চলচ্চিত্র শিল্পে শক্ত অবস্থান তৈরি করবে, এবং ঐতিহাসিক গল্পভিত্তিক বড় বাজেটের সিনেমা নির্মাণে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
সূত্র: হলিউড রিপোর্টার









