বিদেশে পাচারকৃত ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান - সিআইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ আগস্ট, ২০২৫ এ ৫:৩৭ এএম
অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আসছে । ছবি : সংগৃহীত

অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আসছে । ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার করা অর্থ দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে এ তথ্য উদঘাটন করা হয়েছে। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব এ তথ্য তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নয়টি দেশে ৩৫২টি বিদেশি পাসপোর্ট ক্রয়ের তথ্য পাওয়া গেছে, যেগুলো বিপুল অর্থ ব্যয় করে অর্জন করেছে কিছু বাংলাদেশি। দেশগুলো হলো—অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমিনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মাল্টা, সেন্ট লুসিয়া ও তুরস্ক।

আহসান হাবিব জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সিআইসির গোয়েন্দারা দেশগুলোতে গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পাচার করা অর্থ দিয়ে গড়ে তোলা ৩৪৬টি সম্পত্তির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এটি কেবল অনুসন্ধানের একটি আংশিক চিত্র, আরও বহু তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

তিনি বলেন, এই সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে বাংলাদেশের অনুকূলে ফিরিয়ে আনতে এবং অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দুদক, সিআইসি ও পুলিশের সিআইডিসহ বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ছয়টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে সম্পত্তি গড়ে তুলতে সাহস না পায়। তিনি সিআইসিকে অনুসন্ধান আরও বিস্তৃত করার নির্দেশ দেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন, দেশের সম্পদ ফেরাতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক খাতের এ ধরনের লুটপাট ভয়াবহ দেশদ্রোহিতার শামিল। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুষ্ঠু রাষ্ট্র গঠনে এই লুটেরাদের আইনের আওতায় আনা অপরিহার্য। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যারা জাতির সম্পদ লুট করেছে, তাদের পরিচয় জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।