বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১.০৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ কিছুটা ভিন্নভাবে নির্ধারিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাষ্যমতে, সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আমদানি ব্যয়ের চাপ বিবেচনায় রিজার্ভের পরিবর্তন স্বাভাবিক প্রবাহের মধ্যেই রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল–বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসরণ করলে বর্তমান রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৬.৩৮ বিলিয়ন ডলার। এই পদ্ধতিতে রিজার্ভ হিসাবের আওতায় কিছু নির্দিষ্ট দায় এবং তহবিলকে অর্ন্তভুক্ত করা হয়, যা মোট পরিমাণকে প্রভাবিত করে।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক খাতের সামগ্রিক স্থিতি পর্যবেক্ষণ করে রিজার্ভের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক লেনদেনের নিরাপত্তা বজায় রাখতে রিজার্ভের পর্যাপ্ততা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে আমদানি ব্যয়, রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ের ওপর ভিত্তি করে রিজার্ভ ওঠানামা করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বাড়লেও আমদানি ব্যয় উচ্চমাত্রায় থাকায় রিজার্ভে চাপ অব্যাহত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, রিজার্ভকে শক্তিশালী রাখতে বৈদেশিক লেনদেন ব্যবস্থাপনা আরও সুসংহত করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক নীতিমালা ও নজরদারি জোরদার করার মাধ্যমে রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটি দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার অন্যতম প্রধান সূচক। আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি রিজার্ভের ওপর প্রভাব ফেললেও দেশীয় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নীতিনির্ধারকদের সচেতন ও কার্যকর থাকতে হবে।